বিশ্বজুড়ে খাদ্যসঙ্কট: যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার পাল্টাপাল্টি দোষারোপ

জাতিসংঘ

বিশ্বজুড়ে খাদ্যসংকট বেড়ে যাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া একে অপরকে দোষারোপ করছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, রাশিয়া বিশ্বের খাদ্য সরবরাহকে জিম্মি করছে। তাদের দাবি, এতে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা বাড়ছে। এদিকে রাশিয়া বলছে, পশ্চিমাদের দেয়া নিষেধাজ্ঞাই বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এর জন্য রাশিয়া দায়ী নয়। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে এ মন্তব্য করা হয়। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

বাইডেন প্রশাসনের আহ্বান করা ওই বৈঠকে ব্লিনকেন বলেন, রাশিয়া খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে আগ্রাসন চালাচ্ছে। লাখ লাখ ইউক্রেনীয় এবং বিশ্বজুড়ে আরও লাখ লাখ মানুষের খাদ্য সরবরাহ আক্ষরিক অর্থেই রুশ সামরিক বাহিনীর হাতে জিম্মি হয়ে আছে।

যেসব দেশ আগ্রাসনের সমালোচনা করেছে সেসব দেশকে খাবার ও সার সরবরাহ করবে না রাশিয়ার এমন হুমকির কড়া সমালোচনা করে তা বন্ধ করতে ক্রেমলিনের প্রতি আহ্বান জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পাল্টা অভিযোগ করে জাতিসংঘে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, বিশ্বের সব দুর্দশা আর সঙ্কটের জন্য তার দেশকে দোষারোপ করা হচ্ছে। কিন্ত সঙ্কটের জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে দেয়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন তিনি।ভাসিলি দাবি, ইউক্রেন নিজেই তার বন্দরগুলো অবরোধ করে রেখেছে। কৃষ্ণসাগর উপকূলে তারা মাইন পুতে রেখেছে। এছাড়া বন্দরে আটকা পড়ে থাকা বেশ কিছু বিদেশি পণ্যবাহী জাহাজ ছেড়ে দিতে শিপিং কোম্পানিগুলোকে সহায়তা করছে না ইউক্রেন। রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞারও সমালোচনা করেন ভাসিলি। তার ভাষ্য, বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তার ওপর এই নিষেধাজ্ঞার বাজে প্রভাব পড়ছে।

তবে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন পাল্টা দাবি করেন, রাশিয়ার খাদ্য ও সার রপ্তানি বাধাগ্রস্ত করছে না নিষেধাজ্ঞা। খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্তটি শুধুই মস্কোর। তথ্য বলছে, রাশিয়া ও ইউক্রেন বিশ্বের গম সরবরাহের ৩০ শতাংশ এবং বিশ্বের সূর্যমূখী তেলের ৬৯ শতাংশ উৎপাদন করে।এর আগে বৃহস্পতিবার রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ সতর্ক করে বলেন, পশ্চিমারা যদি ক্রেমলিনের ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল না করে তাহলে রাশিয়া খাদ্য সরবরাহ অব্যাহত রাখবে না।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্য সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। সরবরাহ সংকটে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *