পশ্চিম তীরে কংক্রিটের দেয়াল তুলবে ইসরায়েল, চিরস্থায়ী দখলদারত্বের আশঙ্কা ফিলিস্তিনিদের

আন্তর্জাতিক

ইসরায়েল অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড পশ্চিম তীরের উত্তরাঞ্চলের প্রায় ১০০ কিলোমিটার জুড়ে কাঁটাতারের বেড়ার পরিবর্তে কংক্রিটের দেয়াল নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে ইসরায়েল। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিষয়টির অনুমোদনও দিয়েছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে ফিলিস্তিনিদের উদ্বেগ—ইসরায়েল পশ্চিম তীরকে চিরতরে দখল করে নিতেই এই দেয়াল তোলার কাজ শুরু করছে।

ওয়াশিংটনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-মনিটরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০ বছর আগে নির্মিত কাঁটাতারের বেড়ার পরিবর্তে ইসরায়েল ওই দেয়াল তুলতে যাচ্ছে। চলতি মাসের ১৪ নভেম্বর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গান্তেজ দেয়াল তোলার বিষয়টি অনুমোদনও দিয়েছেন। আগামী মাসেই দেয়ালটির নির্মাণকাজ শুরু হওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। নতুন প্রাচীরে উন্নত প্রযুক্তিগত নজরদারি সুবিধা সংযুক্ত করা হবে।

ইসরায়েলের দাবি, ১৯৬৭ সালে নির্ধারিত সীমানা বরাবর এই দেয়াল নির্মাণ করা হবে। তবে ইউনাইটেড ন্যাশনস অফিস ফর দ্য কো–অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স ২০১৩ সালের জুলাইয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেছে, ইসরায়েলের তৈরি সব ধরনের নিরাপত্তা দেয়ালের ৮৫ শতাংশই পশ্চিম তীরের ভূখণ্ডেই অবস্থিত গ্রিন লাইন বরাবর নয়। এর আগে, ২০০৪ সালে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত এ ধরনের নিরাপত্তা দেয়াল নির্মাণ অবৈধ বলে ঘোষণা করে।

জেরুজালেমের অ্যাপ্লাইড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সেটেলমেন্ট মনিটরিং ইউনিটের প্রধান সুহেল খালিলিয়া আল-মনিটরকে বলেছেন, ‘দেয়ালের আসল লক্ষ্য হলো—পশ্চিম তীরের জন্য নতুন সীমানা নির্ধারণ। দেয়ালটি পশ্চিম তীরের প্রায় সাড়ে ১২ শতাংশ জমি কেড়ে নেবে।’

খালিলিয়া আরও বলেছেন, ‘পরিকল্পিত দেয়ালটি মূলত ৭৭১ কিলোমিটার দীর্ঘ যার মধ্যে ইসরায়েল প্রায় ৫০০ কিলোমিটার সম্পন্ন করে ফেলেছে। কাঁটাতারের বেড়ার অন্যান্য অংশগুলোও প্রতিস্থাপনের জন্য কাজ চলছে। জেরুজালেম ও বেথলেহেমের কিছু এলাকায় বাকি অংশের দেয়াল নির্মাণের বিষয়টি এখনো একটি আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে।’

উপনিবেশ এবং প্রাচীর প্রতিরোধ কমিশনের আইন বিভাগের মহাপরিচালক আয়েদ মারার আল-মনিটরকে বলেছেন যে ইসরায়েল গ্রিন লাইনের ভেতরে কমান্ডো অভিযান বন্ধ করার অজুহাতে কংক্রিট দিয়ে বেড়া প্রতিস্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু, তিনি বলেন, প্রাচীরের উদ্দেশ্য আসলে জমি নিয়ন্ত্রণ করা এবং পশ্চিম তীরের বড় অংশকে সংযুক্ত করা

ফিলিস্তিনের কলোনাইজেশন অ্যান্ড ওয়াল রেসিস্ট্যান্স কমিশনের আইনি সহায়তা বিভাগের মহাপরিচালক আয়েদ মায়ার আল-মনিটরকে বলেছেন, ‘দেয়ালটি আসলে ভূমি দখল এবং পশ্চিম তীরের বিশাল অংশ ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত করার লক্ষ্যেই নির্মাণ করা হচ্ছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *