এনআরসি-র বিরুদ্ধে আবারও সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আন্তর্জাতিক প্রধান সংবাদ ভারত রাজনীতি

সোমবার দুপুরে যখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যখন লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করছেন, ঠিক সেই সময় এনআরসি-র বিরুদ্ধে আবারও সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খড়্গপুরের সভা থেকে এনআরসি-র বিরুদ্ধে জোট বাঁধার আহ্বান জানালেন। রেলশহরে বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষকে ‘ভারতমাতার সন্তান’ বলে উল্লেখ করে আহ্বান জানালেন, ‘‘আসুন জোট বাঁধি। এক জনকেও দেশ থেকে তাড়ানো চলবে না। নো এনআরসি, নো ডিভাইড অ্যান্ড রুল। মনে রাখবেন, দেশের থেকে বড় কিছুই নয়।”

এ দিন মমতা খড়্গপুরে এসেছিলেন বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ের পরে শহরবাসীকে ধন্যবাদ জানাতে। রাবণপোড়া ময়দানে ছিল প্রশাসনিক পরিষেবা প্রদানের জনসভার আয়োজন। শহরবাসীকে ধন্যবাদ জানানোর পর আগাগোড়া মমতার বক্তব্য জুড়ে ছিল জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) ও নাগরিকত্ব বিল (সিএবি)-এর বিরোধিতা। মমতা বলেন, “সিএবি আর এনআরসি কয়েনের এপিঠ-ওপিঠ। আমরা সবাই নাগরিক, ভোট দিই, সবার রেশন কার্ড রয়েছে। কারও স্কুল শংসাপত্র, কাজ করার শংসাপত্র, জমির পাট্টা কিছু না কিছু রয়েছে। এর পরে নাগরিকত্ব নিয়ে কী প্রশ্ন রয়েছে!”

নাগরিকত্ব বিলের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর অভয়বাণী, “ভয় পাবেন না। ফেট্টি পড়ে যারা এসে বলবে দেশকে ভাগ করতে, তাদের বলুন, বাংলার সংস্কৃতি ফেট্টিবাজদের জায়গা নয়। আমরা থাকাকালীন কারও ক্ষমতা নেই, আপনাদের উপর জোর করে কিছু চাপিয়ে দেবে।”

কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী আরও যোগ করেন, “আমরা ৭০ বছর, ১০০ বছর ধরে এখানে রয়েছি। দেশের স্বাধীনতার সময় থেকে রয়েছি। আজ আপনারা ঠিক করবেন কে নাগরিকত্ব পাবে, কে পাবে না!” নাগরিকত্ব বিল ও জনগণনা যে এক নয়, তা-ও বুঝিয়ে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর আবেদন, “১০ বছর অন্তর যে সমীক্ষা হয়, তাতে নামটা লিখিয়ে নেবেন। আর রেশন কার্ডের একটি কপি দিয়ে দেবেন।”

‘চাচা’ জ্ঞানসিংহ সোহনপালের শহর খড়্গপুরে পদ্ম ফুটেছিল বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের হাত ধরে। তবে উপনির্বাচনে খড়্গপুর সদরের বিধায়ক হয়েছেন পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার। জয়ের অন্যতম কারিগর মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, বিধায়ক প্রদীপ ছিলেন এ দিনের সভায়। এ দিন বিজেপির নাম না করেই কেন্দ্রের ‘জনবিরোধী’ নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মমতা। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন যে কাজ করেছেন তা মনে করিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আজ তো আপনাদের ভবিষ্যৎ বিপদের মুখে। রেলকে বিক্রির চেষ্টা চলছে। যদি এমন দিন আসে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ব।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *