১৮ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৫টায় ব্যস্ততম রাস্তা রুজভেল্ট এভিউনিউয়ে (৭৩ স্ট্রিট) পার্ক করা গাড়ির (নম্বর জেপিএস-৯৪২২) ট্রাঙ্ক খুলে প্রায় ১০ হাজার ডলার মূল্যের স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতরা। এ সময় গাড়িতে একজন নারী ও শিশু ছিল।
এভাবে দিনের আলোয় মানুষের ভিড়ে ডাকাতরা এসব স্বর্ণালঙ্কার লুট করে পালিয়ে যায়। ঘটনার আকস্মিকতায় গাড়ির আরোহীরা কয়েক মুহুর্ত হতভম্ব হয়ে পড়েন। ধারণা করা হচ্ছে, স্বর্ণালঙ্কারের দোকান থেকে ডাকাতরা তাদের অনুসরণ করছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে অভিযোগ নেয়।
স্বর্ণালংকারের ক্রেতা নিতু তালুকদার পুলিশকে জানান, ১৮ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) দুপুরে তিনি মা-বাবা এবং দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে জ্যাকসন হাইটসে ৭৪ স্ট্রিটে ওমকার স্বর্ণালঙ্কারের দোকানে যান। ওই দোকান থেকে প্রায় ১০ হাজার ডলার মূল্যের স্বর্ণালঙ্কার ক্রয় করেন। এ সময় তাদের গাড়িটি পার্ক করা ছিল ৭৪ স্ট্রিটে মান্নান গ্রোসারির সামনে। তারা জ্যামাইকা এলাকায় নিজের বাসায় ফিরছিলেন। হঠাৎ তাদের মনে হয় যে দেশে টাকা পাঠাতে হবে।
তারা রাস্তা থেকে ফিরে আসেন এবং রুজভেল্ট এভিনিউয়ে গাড়ি পার্ক করেন। নিতু তালুকদার এবং তার স্বামী বিষ্ণু তালুকদার একটি মানি এক্সচেঞ্জে প্রবেশ করেন। এ সময় গাড়িতে ছিল নিতু তালুকদারে বাবা ও মা এবং দু’ শিশু সন্তান। এ সময় নিতু তালুকদারের ছেলে গাড়ি থেকে বের হন। তার সঙ্গে নিতু তালুকদারের বাবাও গাড়ি থেকে বের হন। এ সময় তাদের গাড়ির পেছনে থাকা একটি গাড়ি থেকে ডাকাতরা (একজনের গায়ে লাল রঙের টি-শার্ট ছিল) গাড়ির ট্রাঙ্ক (ব্যাকডালা) খুলে ফেলে এবং ট্রাংকে রাখা স্বর্ণালঙ্কারের থলে নিয়ে দ্রুট পালিয়ে যায়।
দুর্বৃত্তরা মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এই ডাকাতি সম্পন্ন করে। এ সময় পথচারীরাও কিছু বুঝতে পারেন নি বলে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান। এই ঘটনায় নিতু তালুকদারের বয়স্কা মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্স এসে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
নিতু তালুকদারের স্বামী বিষ্ণু তালুকদার জানিয়েছেন, তার স্ত্রীর ভাইয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। তারা স্বর্ণালঙ্কারসহ কেনাকাটা করতে জ্যাকসন হাইটসে এসেছিলেন। বিয়ে উপলক্ষে তারা নভেম্বর মাসে বাংলাদেশে যাবেন। এই বিয়ের জন্য তারা স্বর্ণালঙ্কার ক্রয় করেছিলেন। ডাকাতরা তাদের স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যাওয়ায় পুরো পরিবার মুষড়ে পড়েছে।
বিষ্ণু তালুকদারের ধারনা, জ্যাকসন হাইটসে স্বর্ণালঙ্কারের দোকানের আশেপাশে ডাকাতরা ওঁত পেতেছিল। তাদের অনুসরণ করে সময়-সুযোগ বুঝে হামলা তারা চালিয়েছে। ডাকাতরা ক্রেতাদের অনুসরণ করে বাড়িতে এসেও ডাকাতি করতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে ওমকার স্বর্ণালঙ্কারের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমরা ব্যবসায়ীরাও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও ডাকাত প্রবেশ করেছিল। আমিও বন্দুকের মুখোমুখি হয়েছিলাম। তিনি আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এই ঘটনা জ্যাকসন হাইটস এলাকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।