খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগজনক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, এফএও। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫৩টি দেশের প্রায় ১৯৩ মিলিয়ন বা ১৯ দশমিক ৩ কোটি মানুষ ২০২১ সালে অনাহারে-আধাপেটে দিন কাটিয়েছে। অর্থাৎ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার শিকার হয়েছে কোটি কোটি মানুষ। এর জন্য দায়ী করা হয়েছে যুদ্ধ বা সংঘর্ষ, আবহাওয়ার চরম অবস্থা এবং করোনাভাইরাসের মহামারিকে। তিনটি বিষয়কে একত্রে বিষাক্ত ট্রিপল সমন্বয় হিসেবে চিহ্নিত করেছে জাতিসংঘ। আল জাজিরা।
শুক্রবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে জাতিসংঘ বলেছে, প্রতিদিন পর্যাপ্ত খাদ্যহীন মানুষের মোট সংখ্যা গত বছর চার কোটি বেড়েছে। আফগানিস্তান, কঙ্গো, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া, ইয়েমেনসহ বেশ কয়েকটি দেশ দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের সম্মুখীন হয়েছে। এসব দেশেই সব থেকে বেশি মানুষ আধপেট খেয়ে রয়েছে।
এফএও’র খাদ্য চিত্র ২০২১ বলছে, ইথিওপিয়া, দক্ষিণ সুদান, মাদাগাস্কার ও ইয়েমেনে পাঁচ লাখ ৭০ হাজার মানুষ দুর্ভিক্ষে পড়ে। ৩৬ দেশের তিন কোটি ৯২ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে ছিল। ৪১ দেশের ১৩ কোটি মানুষ ঠিকমতো খেতে পায়নি তিন বেলা। ৪১ দেশের ২৩ কোটি ২৬ লাখ মানুষ খাদ্য সংকটের চরম মুহূর্তে।
প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, দীর্ঘস্থায়ী খরা, খাদ্যের দাম বৃদ্ধি ও ক্রমাগত হিংসার কারণে ২০২১ সালে সোমালিয়ার পরিস্থিতি ছিল বিশ্বের সব থেকে খারাপ। সামনের দিনগুলোতে দেশটির ৬০ লাখ মানুষকে তীব্র খাদ্য সংকটে পড়তে হতে পারে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণেও একাধিক দেশে খাদ্য সংকট আরও বাড়বে। বিশেষ করে লেবাননে সংকট আরও প্রকট হবে। দেশটির খাদ্যশস্যের কম-বেশি ৫০ শতাংশই আসে ইউক্রেন থেকে। ইয়েমেন, সিরিয়া, তিউনিশিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশ তাদের খাদ্যের জন্য ইউক্রেনের ওপর নির্ভরশীল।
ডব্লিউএফপি’র প্রধান অর্থনীতিবিদ আরিফ হোসেন জানিয়েছেন, ৪৭ মিলিয়ন মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। জাতিসংঘের সংস্থা খতিয়ে দেখেছে, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এখন পর্যন্ত খাদ্য ও জ্বালানির দাম ও মুদ্রাস্ফীতির কারণে প্রায় চার কোটি ৭০ লাখ মানুষের সামনে সংকট তৈরি করেছে।