বাংলাদেশ নিয়মতান্ত্রিক অভিবাসন এগিয়ে নিতে অব্যাহতভাবে কাজ করে যাবে

জাতিসংঘ
নিউ ইয়র্ক জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে ‘অভিবাসন বিষয়ক বাংলাদেশ সংসদীয় ককাস এবং অভিবাসন সংক্রান্ত এনজিও কমিটি ও সিভিল সোসাইটি’র সদস্যদের এক পরামর্শমূলক সভায় মো. ইসরাফিল আলম এমপি বলেছেন, নিরাপদ, নিয়মিত ও নিয়মতান্ত্রিক অভিবাসন এগিয়ে নিতে অব্যাহতভাবে কাজ করে যাবে বাংলাদেশ। এছাড়া বাংলাদেশ সরকার প্রবাসে বাংলাদেশী অভিবাসীদের অধিকার সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সকল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে ।
 
উল্লেখ্য, অভিবাসন বিষয়ক বাংলাদেশ সংসদীয় ককাসের সভাপতি মো. ইসরাফিল আলম এমপির নেতৃত্বে বাংলাদেশ সংসদীয় দল ইকুয়েডরের রাজধানী কিটো-তে অনুষ্ঠিত ‘গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট’ এর দ্বাদশ সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে ২৭ জানুয়ারি সোমবার নিউইয়র্কে এই যৌথ পরামর্শমূলক সভায় অংশ নেন।
 
অভিবাসনকে বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি উন্নয়নমূলক ইস্যু হিসেবে উল্লেখ করে ইসরাফিল আলম বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশীদের পাঠানো রেমিটেন্স তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। এছাড়া অভিবাসনকে ত্বরান্বিত করতে এবং অভিবাসন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করেছে যা বৈশ্বিকভাবে নিরাপদ, নিয়মিত ও নিয়মতান্ত্রিক অভিবাসনকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিরই বহি:প্রকাশ।
 
বাংলাদেশ ককাসের সভাপতি আরও বলেন, অভিবাসনের সাথে সংশ্লিষ্ট নানা পক্ষের মধ্যে আলোচনা ও সংলাপের জন্য ‘গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট’ (জিএফএমডি) একটি কার্যকর প্লাটফর্ম। তিনি এটিকে আরও ব্যাপকভিত্তিক করার ওপর জোর দেন। জিএফএমডির সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ‘মানুষের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি’ এবং ‘অনিবন্ধিত অভিবাসীদের ভোগান্তি’ বিষয় দু’টিকে বিশেষ গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করেছে মর্মে অভিহিত করেন। এ বছর জুলাই মাসে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিতব্য উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরামের (এইচএলপিএফ) আলোচনায় সরকার, সংসদীয় ককাস ও সিভিল সোসাইটিসমূহকে অভিবাসন সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলো তুলে ধরা উচিত মর্মে মতামত দেন ইসরাফিল আলম এমপি।
 
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বাংলাদেশ সংসদীয় ককাসের প্রতিনিধিদল এবং অভিবাসন সংক্রান্ত এনজিও কমিটি ও সিভিল সোসাইটির সদস্যগণকে স্থায়ী মিশনে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, অভিবাসন বিষয়টিকে বাংলাদেশ যে বিশেষ গুরুত্বের সাথে দেখছে তার উদাহরণ এই সংসদীয় ককাস সৃষ্টি।
 
অভিবাসনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জিএফএমডির অব্যাহত ভূমিকার কথা উল্লেখ করে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, এটি সরকারি নীতি নির্ধারক ও সিভিল সোসাইটি’র মধ্যে সংযোগ তৈরির একটি প্লাটফর্ম। অভিবাসীদের অধিকার সুরক্ষায় গৃহীত যুগান্তকারী দলিল ‘গ্লোবাল কম্প্যাক্ট অন মাইগ্রেশন’ -এর বাস্তবায়নকে এগিয়ে নিতে জিএফএমডি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে মর্মে অভিমত ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
 
সভায় অন্যান্যের মাঝে আরো অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ সংসদীয় ককাসের সদস্য এবং সাবেক এমপি মাহজাবিন খালেদ, বাংলাদেশি অভিবাসীদের অধিকার রক্ষা কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুল হক, ব্রিটিশ কাউন্সিল এর ‘দায়বদ্ধতা ব্যবস্থাপনার জন্য জ্ঞান উন্নয়ন প্রকল্প (প্রকাশ)’ এর দলনেতা জেরি ফক্স, প্রকাশ এর উপদেষ্টা শিরিন লিরা, অভিবাসন বিষয়ক এনজিও কমিটির সদস্য ইভা রিচার ও মারিয়া পিয়া মিগন্যাটি।
 
অভিবাসনের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ এবং এ সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিদ্যামান বিভিন্ন প্রক্রিয়া কীভাবে কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে এ সভায় প্রাণবন্ত আলোচনা হয়। এছাড়া নারী অভিবাসীগণের বিভিন্ন ঝুঁকি, অভিবাসীদের নিগ্রহ ও নির্যাতন এবং তাদের সঙ্কটসমূহ সভার আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *