ইউনিসেফ নির্বাহী বোর্ডের সভাপতি ও জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেছেন, ডিজিটাল প্লাটফর্ম ও ইন্টারনেট সংযোগের ঘাটতি থাকায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর অধিকাংশ শিশুদের দূর-শিক্ষণ গ্রহণ একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, এই দেশগুলোতে মাত্র ৩০ শতাংশ শিশুর এ সুযোগ রয়েছে। তাই, এই মুহূর্তে অনলাইন ও দূর-শিক্ষণে প্রবেশাধিকারের বিষয়টি হওয়া উচিৎ বৈশ্বিকভাবে সর্বোচ্চ প্রাধিকারভুক্ত বিষয়।
তিনি আজ বোর্ডটির বার্ষিক অধিবেশনের ভার্চুয়াল উদ্বোধনের সময় এসব কথা বলেন।
ইউনিসেফ নির্বাহী বোর্ডের এটিই প্রথম ভার্চুয়াল আনুষ্ঠানিক অধিবেশন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে নিবেদিত ও সাহসী প্রচেষ্টার মাধ্যমে কভিড-১৯ এর সঙ্কট মোকাবিলা করে শিশুদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সারা বিশ্বে দায়িত্বরত ইউনিসেফের কর্মীদেরও ধন্যবাদ জানান তিনি।
বৈশ্বিক এই মহামারী মোকাবিলা ও উত্তরণে ইউনিসেফ গৃহীত কর্মসূচি যাতে সদস্য দেশগুলোর সরকার গৃহীত কর্মসূচিকে সমর্থন যোগাতে পারে এবং তা যেন সরকারি পদক্ষেপসমূহের পরিপূরক হয় সে আহবান জানান ফাতিমা।
তবে তিনি বলেন, সদস্য দেশসমূহে ইউনিসেফের নিয়মিত ও অবশ্য পালনীয় যে সকল কর্মসূচি রয়েছে তা যেন কোনোভাবেই কভিড-১৯ সংক্রান্ত ইউনিসেফের কর্মসূচির পরিপূরক না হয়। বৈশ্বিক এই মহামারিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে নিম্ন আয়ের, স্বল্পোন্নত ও আফ্রিকার দেশসমূহ ভয়াবহ বাস্তবতা মোকাবিলা করছে।
তিনি বলেন, এমনকি সাধারণ হাত ধোয়ার মতো বিষয়টিও অনেক শিশুর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িঁয়েছে, কেননা পানি, পয়:নিষ্কাশন ও স্বাস্থ্য অবকাঠামোতে প্রবেশের সুযোগ থেকে এই শিশুরা বঞ্চিত।
এছাড়া বৈশ্বিক মহামারির প্রেক্ষাপটে ইউনিসেফের টিকাদান কর্মসূচি স্থগিত বা হ্রাস হওয়ার ফলে কলেরা, পোলিও এবং হামের মতো প্রতিরোধযোগ্য রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটার ব্যাপক ঝুঁকি রয়েছে মর্মে উল্লেখ করেন তিনি।
কভিড-১৯ মহামারিকে জাতিসংঘ ব্যবস্থাপনার জন্য একটি‘লিটমাস টেস্ট’হিসেবে উল্লেখ করেন ইউনিসেফ নির্বাহী বোর্ডের সভাপতি। কভিড-১৯ মোকাবিলা ও উত্তরণে ইউনিসেফ গৃহীত কর্মসূচিসমূহ যাতে জাতিসংঘের অন্যান্যসংস্থাগুলোর গৃহীত কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় সে বিষয়ে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন তিনি। এক্ষেত্রে ইউনিসেফকে কৌশলগত নির্দেশনা প্রদান এবং বৈশ্বিকভাবে সমর্থন জোগাতে সবধরনের সহায়তা করতে নির্বাহী বোর্ড সদাপ্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
সংস্থাটির মূলকাজগুলোকে সমুন্নত রাখতে ইউনিসেফের প্রতি উদার ও অব্যাহত সহযোগিতার হাত নিয়ে এগিয়ে আসতে সকলকে উৎসাহিত করেন তিনি।
উদ্বোধনী অধিবেশনে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক মিস হেনরিয়েটা এইচ ফোর।
তিনি ইউনিসেফের কর্মসূচিসমূহ বিস্তারতিভাবে তুলে ধরেন এবং ইউনিসেফ যে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে তাও উল্লেখ করেন। এরপর জাতিসংঘে নিযুক্ত সদস্য দেশসমূহের স্থায়ী প্রতিনিধিসহ অন্যান্য প্রতিনিধিগণ স্ব স্ব দেশের পক্ষে বক্তব্য দেন।⛘