যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকানরা রবিবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। এতে ২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সব সেনা প্রত্যাহারের সময় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় বাইডেন প্রশাসনের সমালোচনা করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়—এমন ব্যক্তিদের সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে অনেক দেরি করেছে বাইডেন প্রশাসন। ২০২১ সালের ১৬ আগস্ট এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
আফগানিস্তান ও ওয়াশিংটনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগেও ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন। এ ছাড়া আফগান নাগরিকদের দেশ ছাড়ার কাগজপত্র প্রস্তুত করার বিষয়টিও ঠিকমতো করা হয়নি বলে প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়।
হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির রিপাবলিকান চেয়ার মাইকেল ম্যাকলের নেতৃত্বে তিন বছর ধরে তদন্ত শেষে প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এই ঘটনায় বিশ্ব মঞ্চে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাসযোগ্যতা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে ৫ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে উঠেছে। রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প গত মাসে একটি প্রচারণা ভিডিও তৈরি করেছেন। এতে দেখা যায়, তিনি আর্লিংটন ন্যাশনাল সিমেট্রিতে ভিডিওটি ধারণ করেছেন। সেখানে সেনা প্রত্যাহারের ঘটনার সময় নিহত সেনাদের সমাহিত করা হয়েছিল।
২০২১ সালের ২৬ আগস্ট মার্কিন ও আফগান নাগরিকদের কাবুল থেকে সরিয়ে নেওয়ার সময় কাবুল বিমানবন্দরের অ্যাবি গেট এলাকায় আত্মঘাতী হামলা হলে ১৩ জন মার্কিন নাগরিক মারা যান। এই ঘটনার জন্য বাইডেন ও কমলা হ্যারিসকে দায়ী করে বক্তব্য দিয়েছেন ট্রাম্প। নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিপক্ষ কমলা হ্যারিস।
জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার সাত মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা সরিয়ে নেওয়ার ওই ঘটনা ঘটেছিল। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট আফগানিস্তানে অভিযান শুরু করেছিল।
প্রায় আট লাখ মার্কিন সেনা এতে অংশ নেন। মারা যান দুই হাজার ২৩৮ জন সেনা, আহত হন প্রায় ২১ হাজার। আর স্বাধীন গবেষকদের মতে, এই সময় এক লাখের বেশি আফগান সেনা ও সাধারণ নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে।