মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের দিন আফগানিস্তানে সরকারি ছুটি ঘোষণা

আন্তর্জাতিক যুক্তরাষ্ট্র

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে তালেবান সরকার। ২০২১ সালের ৩১শে আগস্ট আফগানিস্তান ছেড়ে যান যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল ক্রিস ডনাহু। এ দিনটিকেই সরকারি ছুটির দিন হিসেবে বেছে নিয়েছে আফগান কর্মকর্তারা। তালেবান সরকারের ওয়েবসাইট অনুসারে, প্রতি বছর ৩১শে আগস্ট বিদেশি সৈন্যদের প্রস্থান দিবস উদ্‌যাপন করা হবে। এ খবর দিয়েছে আরটি।

খবরে জানানো হয়, এর আগে ২০২২ সালেও এই দিন নানা আয়োজনে উদ্‌যাপন করেছিল তালেবানরা। এটি ছিল মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের প্রথম বার্ষিকী। তবে গতবার এ দিন উপলক্ষে কোনো ছুটির ঘোষণা ছিল না। তালেবান যোদ্ধারা কাবুলের মাসুদ স্কয়ারে এ নিয়ে একটি বিশাল সমাবেশ আয়োজন করেছিল। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক দূতাবাস ভবনের বাইরে অবস্থিত।

তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি অনুযায়ী, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের আগেই আফগানিস্তান ছাড়ার কথা ছিল মার্কিন বাহিনীর। তারই অংশ হিসেবে ৩১শে আগস্ট মধ্যরাতেই আফগানিস্তান থেকে একটি পরিবহন বিমানে করে চলে যান সর্বশেষ মার্কিন সেনা।

এর মধ্যদিয়ে আফগানিস্তানে ২০ বছরের অভিযান আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ করে যুক্তরাষ্ট্র। ২০০১ সালে আল-কায়েদাসহ অন্য জিহাদি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আফগানিস্তানে সেনা পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে ঘোষণা করে ‘ওয়ার অন টেরোর’। মূলত ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাস দমনের সিদ্ধান্ত নেয় ওয়াশিংটন।

সে সময় আফগানিস্তানে আক্রমণ করার পর খুব দ্রুত কাবুল দখল করে নিতে পারে পশ্চিমা সেনারা। কিন্তু তালেবান পুরো দেশজুড়েই সক্রিয় ছিল। গত ২০ বছরেও তালেবানকে হার মানাতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। আফগান বাহিনীকে অত্যাধুনিক অস্ত্র, প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ দেয়ার পরেও তারা তালেবানের সামনে অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে এই ব্যয়বহুল অভিযান অজনপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকে। ফলে তালেবানের সঙ্গে এক চুক্তির মধ্যদিয়ে দেশটি থেকে সেনা সরিয়ে আনার ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে সেনা সরিয়ে আনার আগেই তালেবানরা কাবুলসহ গোটা দেশ দখল করে নেয়। তাড়াহুড়ো করে সেনা সরাতে গিয়ে নানা ট্র্যাজেডির জন্ম হয় কাবুল বিমানবন্দরে। এখনো ওয়াশিংটনের ওই সেনা প্রত্যাহার নিয়ে বিতর্ক চালু রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *