সম্প্রতি ভারতে পঙ্গপালের হামলাকে পাপের ফল বলে মন্তব্য করেছেন বলিউডের সাবেক অভিনেত্রী ‘দঙ্গল’ তারকা জাইরা ওয়াসিম।
গত বৃহস্পতিবার নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে এমন মন্তব্য করেন তিনি। তবে সমালোচনার মুখে পরে সেই পোস্ট মুছে ফেলেন জাইরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ভারতে পঙ্গপালের হামলা পাপের ফল। আল্লাহর রোষে এই পরিণতি, কর্মফল। কোরআনের সুরা আ’রাফের এই আয়াত উল্লেখ করে টুইট করেন জাইরা ওয়াসিম।
পঙ্গপাল সম্পর্কিত কোরআনের ওই আয়াতের অর্থ হলো- ‘অতঃপর আমি তাদের ওপর প্লাবন, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ ও রক্তের বিপদ পাঠিয়েছিলাম সুস্পষ্ট নিদর্শন হিসেবে, কিন্তু তারা ঔদ্ধত্য প্রকাশ করল। তারা ছিল এক অপরাধী জাতি।’
এরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার মুখে পড়ে নিজের টুইটার এবং ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে সেই পোস্ট ডিলিট করে দেন সিক্রেট সুপারস্টার অভিনেত্রী।
সম্প্রতি করোনা-আম্পান সংকটের মধ্যেই ভারতে হানা দেয় পঙ্গপাল। মরুভূমি থেকে আসা এই পঙ্গপাল ইতোমধ্যে দেশটির প্রায় ৫০ জেলায় হানা দিয়েছে।
২০১৯ সালেও একবার পঙ্গপালের দল ভারতে হানা দিয়েছিল।
প্রসঙ্গত, জাইরা ওয়াসিম ২০১৬ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে আমির খানের সঙ্গে ‘দঙ্গল’ ছবিতে কুস্তিবিদ গীতা প্রগতের চরিত্রে অভিনয় করেন। ৭০ কোটি রুপি খরচ করে বানানো এই ছবি বক্স অফিসে তুলে আনে প্রায় ২১০০ কোটি রুপি।
এটি এখন পর্যন্ত ভারতের সব থেকে বেশি অর্থ উপার্জনকারী ছবি। আর এই ছবি জম্মু ও কাশ্মীরে জন্ম নেওয়া জাইরা ওয়াসিমকে এনে দেয় জাতীয় পুরস্কার।
তার পরের ছবিটিও ছিল প্রথাবিরোধী। আর সেটিও ছিল আমির খানের সঙ্গে। ‘সিক্রেট সুপারস্টার’ নামের সেই ছবি জাইরা ওয়াসিমকে উপহার দিয়েছিল ফিল্মফেয়ারে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার।
কিন্তু পাঁচ বছরের জনপ্রিয়তাকে উপেক্ষা করে ২০১৯ সালের জুন মাসে অভিনয় জগত ছাড়ার ঘোষণা দেন কাশ্মীরি কিশোরী জাইরা ওয়াসিম।
ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে অভিনয় থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, পাঁচ বছর আগে তিনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা চিরকালের জন্য তার জীবন বদলে ফেলেছে।
যে মুহূর্তে তিনি বলিউডে পা রেখেছিলেন, তার জন্য বিশাল জনপ্রিয়তার দরজা খুলে গিয়েছে। তিনি সাধারণ মানুষের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হয়ে উঠছিলেন, সাফল্যের প্রতীক হিসাবে তাকে তুলে ধরা হয়েছিল এবং প্রায়ই তাকে তরুণদের রোল মডেল হিসেবে চিহ্নিত করা হতো।
কিন্তু, তিনি যা করতে চেয়েছিলেন বা হতে চেয়েছিলেন, তার কোনটাই এগুলো নয়, তার কাছে সাফল্য এবং ব্যর্থতার যা ধারণা, তিনি সবে তা বুঝতে শুরু করেছেন।
এরপর জায়রা লিখেছেন,‘আমি বুঝতে পেরেছি আমি বহু দিন ধরেই অন্য একজন হয়ে ওঠার চেষ্টা চালাচ্ছিলাম। এই জগত আমাকে অনেক ভালোবাসা, সমর্থন, প্রশংসা দিয়েছে, কিন্তু এই জগত আর যেটা করেছে তা হলো আমাকে ক্রমশ অবমাননার দিকে ঠেলে দিয়েছে, ক্রমশ অসচেতনভাবে আমি আমার ঈমান (বিশ্বাস) থেকে বেরিয়ে এসেছি।
কারণ আমি এমন একটা পরিবেশে কাজ করতাম যা ক্রমাগত আমার ঈমানের মাঝে এসে দাঁড়াত, ধর্মের সঙ্গে আমার সম্পর্ক বিপন্ন হয়ে পড়েছিল।’ ⛘