গাজায় আটক ইসরাইলি নাগরিকদের পরিবারগুলোসহ হাজার হাজার ইসরাইলিদের বিক্ষোভে রীতিমত উত্তাল রাজধানী তেলআবিব। তাদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধের ছদ্মাবরণে জিম্মি উদ্ধারে গড়িমসি করছেন।
শনিবার তেলআবিবের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দফতরের কাছে এক সংবাদ সম্মেলনে জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা বলেন, ‘দখলকৃত উত্তর ফিলিস্তিনে যুদ্ধ শুরু করার নামে নেতানিয়াহু জিম্মিদের উদ্ধারে গড়িমসি করছেন, তিনি তাদের পরিত্যাগ করার ক্ষমতা রাখেন না’।
পরিবারগুলোর অভিযোগ, নেতানিয়াহু তাদের গাজায় আটক স্বজনদের জীবনকে অবহেলা করছেন। সেই সঙ্গে বহু ফ্রন্টে উত্তেজনা আরও বাড়াতে মনোনিবেশ করছেন।
এ পরিস্থিতিতে তারা প্রেসিডেন্ট আইজাক হারজোগের প্রতি অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে নেতানিয়াহুর সরকারকে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে জিম্মি বিনিময় চুক্তিতে আলোচনার জন্য চাপ দেওয়া হয়।
ইসরাইল সরকারের কারাগারগুলোতে বর্তমানে প্রায় ৯,৫০০ ফিলিস্তিনিকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে আনুমানিক ১০১ জন ইসরাইলি গাজায় আটক রয়েছেন। হামাস জানিয়েছে, গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলায় তদের বহু জিম্মি নিহত হয়েছেন।
তেলআবিব সরকার এবং হামাসের মধ্যে পরোক্ষ যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময়ের আলোচনা সম্প্রতি সংকটপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছেছে। নেতানিয়াহু গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যেতে এবং দক্ষিণ ও মধ্য অংশের প্রধান করিডোরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিতে অটল।
তবে হামাস গাজা থেকে সম্পূর্ণ ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার এবং বাধাহীনভাবে স্থান ও বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে আসছে।
এদিকে শুক্রবার বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপশহরে ইসরাইলি বিমান হামলায় অন্তত ৪৫ জন নিহত হওয়ার পর, ইসরাইল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে গেছে।
হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, ওই হামলায় তাদের অন্তত ১৬ জন সদস্য নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে শীর্ষ নেতা ইব্রাহিম আকিল এবং কমান্ডার আহমেদ ওয়াহবিও ছিলেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার ও বুধবার পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণের পর লেবাননের সরকার এবং হিজবুল্লাহ এ বিস্ফোরণের জন্য ইসরাইলকে দায়ী করে। যদিও তেলআবিব সরকার তার ভূমিকা সম্পর্কে কোনো বক্তব্য দেয়নি।
এদিকে হিজবুল্লাহ এবং ইসরাইল যখন তাদের সীমান্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে, তখন গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত প্রায় ৪২ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি